শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

শরতের আহবান -ফাতেমা রহমান

আয় আয় সখা- সখি
কে কোথায় আছিস তোরা।
শুভ্র কাশেরা কানে কানে বলে
মনে আছে যত দ্বন্দ্ব, গ্লানি
সব এবার কর সারা।
শরৎ এসেছে,শুভ্র সতেজ
হাত ছানিতে ডেকেছে
তবে দাওনা সাড়া।
শিউলি ফুলের মৌ মৌ গন্ধে
স্বর্গ রাজ্য এখন ধরা।
নীল আকাশে সাদা
মেঘেরা করছে খেলা
কী এক আনন্দ বন্যায়
চৌদিকে সকলে দিশেহারা।

স্মৃতি - কবি ফাতেমা রহমান

তোমার আমার গন্তব্যস্থল
সেই যে কৃষ্ণচূড়ার তল।
বনফুল কুড়িয়ে শত শত
আনন্দ উচ্ছ্বাসে আকুল হয়েছি কত!!
শ্যামলিমায় ঘেরা সেই বন পথ
হয়েছে কালের সাক্ষী সম্মত।
কতদিন হয়নিকো দেখা
হৃদয় পাতায় হাজার স্মৃতি আঁকা।
কথার মালারা ঘুরপাক খায়।
সময়তো ফুরায়ে সময়ের চাকায়।
তবু দেখা আর অদেখা তুমি,আমি দূরে নই
মনের গহীনে খুব কাছাকাছি রই।
অতি ক্ষুদ্র এ মানব জীবন
নিষ্পাপ ভালোবাসা বেঁচে চিরন্তন।

বৃহস্পতিবার, ২৮ মে, ২০২০

ফেরারী আঁধার -কবি নুরুন নাহার আক্তার বকুল

আলোক পৃথিবীটা থমকে আসছে হয়তো,
বিচ্ছুরিত ভূবন ফেরারী আঁধারে যেনো ঢাকে।
চশমার ফ্রেম গুলোও খুব ভারি বোধ হয়,
শব্দের অক্ষরগুলো যেনো কালো বিন্দু বিন্দু!
চোখের সামনে অযথাই ঢেউ খেলে সদা সমীরণ,
ভূ-কম্পনে ঝাঁকিয়ে দেয় আশেপাশের সব চেনাদিক!
সোনালি আভারা কেনো এমন মেঘে মেশে যায়,
কেনো ঝরাতে আসেনা আর অশ্রু বারিধারা!!
স্বপ্নেরা যেথা ডানা জাপটে আশা নাচন খেলে,
অন্তঃক্ষরণগুলো যেনো দোলে নিরাশার দোলাচলে!
তবু আশাহত হতে শিখেনা এই দগ্ধ হৃদয় সম,
আজও স্বপ্নবুননে ক্ষান্ত করার সাধ্যাতীত সে!
আঁধারে ঢাকা এই চোখে আলোক বিলিয়েছে,
কতো স্বপ্ন বোনেছে আর যতনে গড়েছে কচিপ্রাণ!
তোমাদের চোখ যখন উচ্চ শিখরে চড়ায় সাধে,
তার চোখ তখন বিলায় আপনারে জগতময়!
যখন তোমরা আপন সুখ ভোগে মত্ত্ব থাকো,
ওচোখ তখন নির্ঘুম অশ্রুধারায় ভেসেছে।
শিকল পরাবার ছলে বাঁধন জড়িয়েছো তারে,
সত্যিকারের সুখ আদৌ পেয়েছো হৃদভূমে!
সমাধি হোক তব আঁধার আসার আগে,
জমুক বুনো ফুলেরা সেথা আপন ভালবাসায়।
পুষ্পেরা হেসে হেসে রবির আলোয় নাচবে যবে,
এসো নাহয়,, দু'ফোঁটা বারি ঝরায়ে হাসবে একা!
নিঃসঙ্গ হাহাকারে নির্বিচারগুলো রেখো গুটিয়ে,,
যা তুমি করেছিলে দান,ভালবাসার অভিনয়ে!
যে আলো প্রজ্জ্বলিত হাজারে কচি ও শুভ্র প্রাণে,,
খোদা তুমি সে আলো দিও না'কো নিভিয়ে!
নিঃশ্বাসে নিঃশেষ অবগাহনে ভেবে যাই আনমনে,
একফোঁটা অশ্রুও যেনো অভিশাপ হয়ে নাহি ঝরে!
স্বপ্নেরা এসো আলিঙ্গনে, ভালবাসার কঠিন দ্বারে,,
আলো নিয়ে ফিরবো হয়তো আবার আঁধার ভূবনে!!

রবিবার, ২৪ মে, ২০২০

সেকালের ঈদ - কবি মোক্তার আহমেদ ,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

একদা আমারও ঈদ আসিত মহানন্দে,
চোখে নিদ্রা নাহি আসিত জাগিতাম সানন্দে।
পিতার কাছে ধরিতাম বায়না নতুন জামা চাই,
বর্গাচাষি পিতা শূন্য হস্তে থাকিত নিরুপায়।
সেকালে ছিলাম মোরা চারি ভাই বোন,
কষ্টে পিতা যোগাত ডাল, ভাত আর নুন।
প্রতিবেশী সবাই যখন পড়িত বস্ত্র নতুন,
ভাই বোন মোরা আফসোসিতাম কত শত গুন।
পিতা যখন হাটে যাইত থাকিতাম উদগ্রীব,
কখন আসিবে পিতা, জ্বালাইয়া রাখিতাম প্রদীপ।
রিক্ত হস্তে পিতা যখন আসিত ঘরে ফিরি,
উপোস থাকিতাম মোরা পিতার সহিত অভিমান করি।
শয়ন কক্ষে মাতা-পিতা কষ্টে করিত প্রলাপ,
একদা তাহাদের সংলাপ হেরিয়া, হইলাম অনুতাপ।
সেইদিন হইতে করিলাম পণ, হইব বড় মস্ত,
সমগ্র অপূর্ণরে করিয়া দূর পূর্ণিব পিতার হস্ত।
বড় হইবার বাঞ্চ্ছা নিয়া পাঠ করিলাম শুরু,
একে একে পাঠ চুকাইয়া হইলাম শিক্ষাগুরু।
একালে আর নাহি মোর অন্ন বস্ত্রের অভাব,
তবু অন্যের লাগিয়া কাদি মন এই মোর স্বভাব

মানুষের মূল্য-কবি মোক্তার আহমেদ,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

ছোট্ট শিশু পিতাকে করিল প্রশ্ন শত,
জানিবার চাহিল মানুষের মূল্য কত?
পিতা সন্তানেরে দিতে চাহিল শিক্ষা,
পস্থরখন্ডের দ্বারা তাই দিয়াছিল দীক্ষা।
পিতা বলিল পস্থরখানি বিক্রি করিবে বাজারে,
দাম হাকিবে উচাইয়া দুই অংগুলি করে।
প্রথমদিন বাজারে নিইয়াছিল পস্থরখানি,
দুই অংগুলি দেখিয়া ক্রেতা বুঝিল দুইশত পেনি।
দ্বিতীয় দিন পস্থর নিয়া গিয়াছিল যাদুঘরে,
কর্তা শোধাইল বিক্রি করিবে কি দুই হাজারে?
তৃতীয়দিন পস্থর লইয়া দেখাইয়তে গিয়াছিল বণিক,
বণিক বার্তায় পস্থরের মূল্য হইবে দুই লক্ষের অধিক।
তিন স্থানের তিন রকমের মূল্য শুনি,
জিজ্ঞাসিল পিতারে বিস্ময়ে শিশুমনি,
একই পস্থরের মূল্য হইল কেন ভিন্ন পেনি?
পিতা শোধাইল মানুষের মূল্য পস্থরেরই মতন,
উপযুক্ত মূল্য পাহিবে, পাহিলে উপযুক্ত জন,
কোথাও তুমি ছাই হইবে, কোথাও তুমি রতন।

শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০

মহাবিশ্বের রহস্য-কবি মোক্তার আহমেদ,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

হে মহাবিশ্বের মহারাজ,তুমি বিশ্বভ্রহ্মন্ড করিয়াছ সৃজন,
সৃষ্টির রহস্য তুমি লুকাইয়াছ, করোনি উন্মোচন।
পনের শত কোটি বৎসর পূর্বে মহাবিশ্বকে রাখিয়াছিলে করিয়া অতি পরমাণু,
মহাবিস্ফোরণ ঘটাইয়া সৃজিলে ছায়াপথ আর গ্রহাণু।
সপ্ত নক্ষত্র দিয়া জ্যোতিষ্কমন্ডল গড়িয়াছ এ বিশ্বভ্রম্মান্ডে,
গোল, সর্পিল আর অবয়বহীনে নভশ্চরকে রূপাইয়াছ বাষ্পপিন্ডে।
বেটেলগমকে বৃহৎ করিয়া লুব্ধককে করিয়াছ উজ্জ্বলতম,
ধরণীকে বাসযোগ্য করিতে সূর্য্যিরে করিলে নিকটতম।
জীমূতবিহীন তমসাচ্ছন্ন আকাশে দিয়াছ ঋক্ষমন্ডলী,
কালপুরুষ, ক্যাসিওপিয়া আর দিয়াছ সপ্তর্ষিকুন্ডলি।
ধূলিকণা, নভশ্চর আর বাষ্পকুন্ডে গড়িয়াছ ছায়াপথ,
কসমিক ইয়ার হই প্রয়োজন ঘুর্ণন করিতে রথ।
ধুমকেতুরে করিয়াছ উজ্জ্বল ঝাঁটার ন্যায় দীর্ঘ বাষ্পময়,
হেলবপ নাকি সর্বাধিক উজ্জ্বল কহেন জ্যোতির্ময়।
অষ্ট গ্রহের সৌর পরিবার ঘুরিছে ক্রমাগত,
ধরণী মোদের ঘুরিছে চৌদিক পাহিছে আলোক যত।
সমস্ত শক্তির উৎস করিয়া সূর্য্যিরে করিলে দান,
সূর্য্যির কাছে অন্য সৃষ্টিরে ঋণি করিয়াছ হে মহান।
সূর্য আর ধরনীর মধ্যে চন্দ্র আসিলে ঘটাও অমবস্যা,
পূর্ণিমা তিথি হই ধরণীকে চন্দ্র- সূর্য করিলে গ্রাস্যা।
এই অসীম সৃষ্টির মধ্যে ক্ষুদ্র মোরা, করি অহংকার,
বুঝিবার সাধ্য নাহি মোদের রহস্য তোমার।

বৃহস্পতিবার, ২১ মে, ২০২০

প্রশংসা তোমার-কবি মোক্তার আহমেদ,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।


 হে অধিপতি মহান, তোমারই স্তুতি বহমান,
আঠারো হাজার সৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠাইয়াছ মানব সন্তান।
অংকুর গরিয়াছ মোদের জনক জননীর ভ্রুণকোষে,
তনু মোদের বাধিয়াছ নিপুণ দীর্ঘ শাসে।
লহু, পলল খাচায় বাধিয়া পাঠাইয়াছ পরবাসে,
পেনি ছাড়া পবন দিয়াছ মোদের ভালবেসে।
দুইশত ছয় কাঠির নির্জীব এই কক্ষে,
পেন্ডুলাম আনতশির করিয়াছ বাঁ বক্ষে।
মর্মদেশ মোদের কম্পিছে আটচল্লিশ হাজার প্রতি ষাটে,
অধিকম্প মোদের গুপ্ত হইলে বিলীন হইব এই হাটে।
জ্ঞাত মোদের দিইয়াছ মস্তিষ্কে করিতে শ্রেষ্ঠ,
সমগ্র সৃষ্টিরে সৃষ্টিলে করিতে মোদের তুষ্ট।
সৃষ্টি তোমার সেবিছে মোদের হুকুমে ক্রমাগত,
মোদের তুমি ফরমাশিলে করিতে মস্তকনত।
ফরমাইয়েশ ভূলিয়া মোরা চাইলাম দুনিয়াদারি,
মন্দ চোরার ফান্দে পড়িয়া করিলাম পুকুর চুরি।
হুকুম তোমার অমান্য করি, পাপ যে পর্বত সমান,
তবু ক্ষমা করিয়া যাও মোদের তুমি রহমান।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

শরতের আহবান -ফাতেমা রহমান

আয় আয় সখা- সখি কে কোথায় আছিস তোরা। শুভ্র কাশেরা কানে কানে বলে মনে আছে যত দ্বন্দ্ব, গ্লানি সব এবার কর সারা। শরৎ এসেছে,শুভ্র সতেজ ...